ঢাকা: এখনও জমে ওঠেনি গাবতলীর পশুর হাট। রাজধানীর সর্ববৃহৎ গবাদি পশুর হাটে সবেমাত্র কোরবানির গরু আসতে শুরু করেছে। আগামী বুধ-বৃহস্পতিবার (৭-৮ সেপ্টেম্বর) নাগাদ হাট জমজমাট হয়ে উঠবে বলে জানান গরু ব্যাপারীরা।
শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) থেকে পুরোদমে বেচা-কেনা শুরু হবে বলেও ব্যবসায়িরা আশা করছেন। এরই মধ্যে যে সব গরু হাটে এসেছে তা বিক্রি নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যেই দাম-দর চলছে। কোরবানির গরুর ক্রেতারা এখনও হাটমুখী হননি বলেও জানান তারা।
সোমবার (০৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে গাবতলীর পশুর হাট ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে। এ সময় দেখা যায়, রাতে দু’একটি ট্রাকে করে গরু হাটে আসছে।
এদিকে গরুর দাম নিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে দুই ধরনের বক্তব্য পাওয়া গেছে। যারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গাবতলীর হাটে গরু নিয়ে এসেছেন তারা বলছেন এবার গরুর দাম কম। এখন পর্যন্ত যে দাম উঠছে তা পোষানোর মতো না।
অন্যদিকে যেসব ব্যবসায়ী একই হাটে গরু কিনতে এসেছেন তারা বলছেন, এবার গরুর দাম অনেক বেশি। এই দামে কিনে কোরবানির ক্রেতাদের কাছে বেচতে গেলে ব্যবসায় পোষাবে না।
কেউ কেউ বলছেন গরুর দাম প্রকৃত অর্থে কোন পর্যায়ে দাঁড়াবে সেটা নির্ভর করবে ভারতীয় গরুর আমদারিন ওপর। ভারত থেকে কত সংখ্যক গরু আসবে সেটা দেখার বিষয়। কোরবানির বাজারের শেষ দিকে ভারতীয় গরু ঢুকতে পারে বলে তারা মনে করছেন। এবার কোরবানির জন্য দেশেই প্রচুর গরু পালন হয়েছে। ভারতের গরু এলে দেশি গরুর দাম কমে যাবে বলেও তাদের আশঙ্কা।
এ কারণে এখন গরু কিনে বিক্রির সময় বিপাকে পড়তে হয় কি না তা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
নারায়গঞ্জের সোনারগাঁওয়ের ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এবার গরুর দাম বেশি। গত বছরের তুলনায় এই দামের ব্যবধান গরু প্রতি ১৫/২০ হাজার টাকা বেশি।
শফিকুল ইসলাম গাবতলীসহ বিভিন্ন হাট থেকে গরু কিনে সোনারগাঁও হাটে বিক্রি করেন। তিনি বলেন, এবার দেশে যথেষ্ট গরু আছে। তারপরও দাম কমেনি। ভারত থেকে গরু এলে দাম কমে যাবে। ভারতের গরু আসে ঈদের এক/দুই দিন আগে।
আরেক ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গরুর দাম বেশি। ভারতের বর্ডার বন্ধ, গরু আসছে না। এই সুযোগে বিভিন্ন জায়গা থেকে গরু নিয়ে আসা ব্যাপারীরাও দাম ছাড়ছে না।
তবে কুষ্টিয়ার ব্যবসায়ী হাসান কিবরিয়া জানান, গরুর দাম কম। সোমবার রাতে ১১টি গরু নিয়ে এসেছেন তিনি। গত চার/পাঁচ মাস আগে এই গরুগুলো কিনে নিজের খামারে পালন করেছেন। যে দাম উঠছে তাতে লাভ থাকছে না।
তিনি একটি গরু দেখিয়ে বলেন, এটি ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে কেনা। গরুর খাবারের প্রচুর দাম বেড়েছে। ৯০/৯৫ হাজার টাকা বিক্রি না হলে লাভ থাকে না। এখন পর্যন্ত কেনা দাম উঠছে।
ব্যবসায়ী মতিউর রহমান বলেন, গরুর দাম অনেক কম। কোরবানি যারা দেবে তাদের কাছে এখনও বেচা-কেনা শুরু হয়নি। মানুষ এখনও হাটে আসা শুরু করেনি। গরু রাখার অসুবিধা, মানুষ ১ দিন আগে কিনতে চায়। বুধ-বৃহস্পতিবার হাট জমজমাট হবে। আগামী শুক্রবার থেকে মানুষের ভিড়ে এখানে দাঁড়ানো যাবে না।